বাংলাদেশে স্টারলিংক: স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের সম্ভাবনা ও বাস্তবতা

Starlink এখন বাংলাদেশে। জানুন এর সুবিধা, অসুবিধা ও কেন অনেকে রায়ান্স কম্পিউটার থেকে কিনছেন সরাসরি অর্ডারের ঝামেলা এড়াতে।
BlogHunter
Starlink kit available in Bangladesh
বাংলাদেশে Starlink ডিভাইসের উপস্থিতি। উৎস: Starlink official

২০২৫ সালের মে মাসে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয়েছে Starlink স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা। SpaceX-এর এই প্রকল্পটি বিশ্বজুড়ে আলোচিত, বিশেষ করে প্রত্যন্ত ও অবকাঠিন্যপূর্ণ এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করার জন্য।

Starlink মূলত লো-আর্থ অরবিট (LEO) স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সরবরাহ করে, যার ফলে ব্যবহারকারীরা সরাসরি একটি ডিস ও রাউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেট সিগন্যাল গ্রহণ করতে পারেন। এটি প্রচলিত মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ফাইবার-ভিত্তিক সংযোগের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল ও কম ল্যাটেন্সি সম্পন্ন হতে পারে।

অর্ডার প্রক্রিয়া ও সরবরাহ সমস্যাগুলো

বাংলাদেশে Starlink ব্যবহারের জন্য এখনো সরাসরি লোকাল রেজিস্ট্রেশন বা সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম চালু হয়নি। ফলে, যাঁরা Starlink ডিভাইস কিনতে চান, তাঁদেরকে অফিসিয়াল Starlink ওয়েবসাইট থেকেই অর্ডার করতে হচ্ছে। তবে এখানেই তৈরি হচ্ছে জটিলতা।

অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করছেন, অর্ডার দেওয়ার পর পণ্য হাতে পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, শিপমেন্ট জটিলতা এবং কার্গো প্রসেসিংয়ের কারণে অনেকে মাসের পর মাস অপেক্ষা করছেন। এই অবস্থায় অনেকেই বিকল্প পথ খুঁজতে গিয়ে স্থানীয় বাজারে নজর দিচ্ছেন।

লোকাল মার্কেটে Starlink

বর্তমানে বাংলাদেশে কয়েকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান Starlink ডিভাইস আমদানি করে বিক্রি শুরু করেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো Ryans Computers। প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন শহরে শাখার মাধ্যমে Starlink কিট সরবরাহ করছে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা সরাসরি লোকাল শপ থেকেই ডিভাইস সংগ্রহ করতে পারছেন এবং বিক্রয়োত্তর সহায়তাও পাচ্ছেন।

Starlink kit available in Bangladesh via Ryans Computers
বাংলাদেশে Starlink ডিভাইসের উপস্থিতি। উৎস: Ryans Computers

Starlink-এর সুবিধাসমূহ

  • উচ্চ গতি: সাধারণত ৫০-২৫০ Mbps পর্যন্ত ডাউনলোড স্পিড পাওয়া যায়।
  • কম ল্যাটেন্সি: গড় ল্যাটেন্সি ২০-৪০ মিলিসেকেন্ড, যা ভিডিও কনফারেন্স ও গেমিংয়ের জন্য উপযুক্ত।
  • প্রত্যন্ত এলাকাতেও কার্যকর: যেখানে ফাইবার পৌঁছায় না, সেখানে Starlink কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।
  • পোর্টেবল: এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরানো সম্ভব, যা ক্যাম্পিং বা রিমোট ওয়ার্কের জন্য উপযোগী।

কিছু সীমাবদ্ধতা

  • দাম: স্টারলিংক কিটের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি, যার সাথে আছে সাবস্ক্রিপশন চার্জ।
  • আবহাওয়ায় প্রভাব: ভারী বৃষ্টি বা ঝড়ো আবহাওয়ায় সিগন্যাল কিছুটা দুর্বল হতে পারে।
  • ইনস্টলেশন জটিলতা: সঠিক সিগন্যাল পাওয়ার জন্য খোলা আকাশের নিচে ইনস্টলেশন দরকার হয়।
  • স্থানীয় সাবস্ক্রিপশন অপশন: সরাসরি রেজিস্ট্রেশন বা প্ল্যান পরিবর্তনের সুবিধা এখনো নেই।

উপসংহার

Starlink প্রযুক্তি বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় এখনো ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছায়নি, সেখানে এটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে। তবে, এখনও কিছু বাস্তব চ্যালেঞ্জ রয়েছে—বিশেষ করে সরবরাহ, দাম, এবং কাস্টমস প্রসেস সংক্রান্ত বিষয়গুলো।

যাঁরা অপেক্ষা করতে রাজি নন বা অনলাইন অর্ডারে জটিলতা এড়াতে চান, তাঁদের জন্য লোকাল মার্কেটে, বিশেষ করে Ryans Computers-এর মাধ্যমে Starlink ডিভাইস পাওয়া যাচ্ছে—যা অনেকের জন্য একটি সহজ ও দ্রুত সমাধান হয়ে উঠছে।

Sources: starlink.com, ryans.com

Post a Comment